ইসলাম

ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ ? মাওলানা শরিফ আহমাদ

ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ ?

 

 

সূচিপত্র

ঈদে মিলাদুন্নবী কত তারিখে ?

 

বাংলাদেশের আকাশে গত সোমবার ২৬ সেপ্টেম্বরে কোথাও পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি । ফলে বুধবার ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে পবিত্র রবিউল আউয়াল মাস গণনা শুরু হয়েছে । সে অনুযায়ী দেশে পবিত্র মিলাদুন্নবী পালিত হবে আগামী ৯ অক্টোবর রবিবার। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভা কক্ষে উক্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় । উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সহ আরো গণ্যমান্য অনেক ব্যক্তিবর্গ ।

 

ঈদে মিলাদুন্নবী অর্থ কি ?

 

ঈদ অর্থ আনন্দ, উৎসব । মিলাদুন্নবী অর্থ নবীর জন্ম।

সুতরাং ঈদে‌ মিলাদুন্নবী অর্থ হলো নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্ম উপলক্ষে আনন্দ প্রকাশ করা ।

 

ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন?

 

চান্দ্র মাস অনুযায়ী আরবী বর্ষপঞ্জির হিসাব চালু হয় । আর আরবী ১২ মাসের মধ্যে অন্যতম হলো রবিউল আউয়াল মাস । এ মাসের ৮ তারিখ, ৯ তারিখ অথবা ১২ তারিখে পৃথিবীতে আগমন করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম । মহান নবীর জন্ম নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । এবং ঈমানদারদের খুশি হওয়ার কারণ । এজন্যই প্রতি বছর যখন রবিউল আউয়াল মাস আগমন করে তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে এই দিনটিকে উদযাপন করা হয় । দেশব্যাপী আলোচিত হয় মিলাদুন্নবী উপলক্ষে মাহফিল, দোয়া দরুদ ও আলোচনা সভা।

 

ঈদে মিলাদুন্নবীর রোজা

 

রবিউল আউয়াল মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য থাকলেও মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিশেষ কোন রোজার নির্দেশনা নেই । তবে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন। এ সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, আবু কাতাদাহ আনসারী রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, সোমবারের রোজা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন ,এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছি আর এই দিনেই আমাকে রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছেন করা হয়েছে । ( কিংবা তুমি বলেছেন) এদিনেই আমার উপর প্রথম ওহী নাযিল করা হয়েছে । ( সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৬২, আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪২৬)

ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ ?

প্রতি সোমবারের পাশাপাশি বৃহস্পতিবারও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখতেন । এ সম্পর্কে নবীজির ঘোষণা হলো, বৃহস্পতি ও সোমবার মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে বান্দার আমল উপস্থাপন করা হয় । তাই আমি চাই আমার আমল পেশ করার সময় আমি যেন রোজা অবস্থায় থাকি ।

( সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং ২৩৫৮)

অতএব আশেকে রাসুলগণ মিলাদুন্নবী উদযাপন করতে চাইলে প্রতি সোমবার এবং বৃহস্পতিবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত রোজা রাখুন । মূলত রোজার মাধ্যমে প্রমাণিত হবে কে প্রকৃত আশেক রাসূল আর কে মিথ্যাবাদী আশেকে মিষ্টি । অর্থাৎ জিলাপি খোর ।

 

ঈদে মিলাদুন্নবীর নামাজ

 

ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে কোন নামাজের নির্দেশনা নেই । পূর্ববর্তী ইমাম-মুহাদ্দিস কেউ করেছেন মর্মে কোন বর্ণনাও নেই । বাজারে প্রতিটা প্রচলিত ছোটখাটো বইয়ের মধ্যে কোন নিয়ম লেখা থাকলে সেগুলো ভিত্তিহীন বর্ণনা । আর জাল ওগুলোর উপর আমল করার কোন সুযোগ নেই ।

 

ঈদে মিলাদুন্নবীর ইতিহাস

 

প্রখ্যাত ইসলামী ঐতিহাসিক আল্লামা ইবনে খাল্লিকান বলেন ,আবুল আখতাব ওমর ইবনে দেহয়া নামক দরবারে আলেম দ্বারা ইরাকের তদানীন্তন বাদশা আবু সাঈদ মুজাফফরুদ্দিন কুকরি ৬০৪ হিজরিতে ইরাকের মুসিল শহরে সর্বপ্রথম মিলাদ কিয়ামের প্রবর্তন করে । এরপর ধীরে ধীরে তা অগ্রসর হতে থাকে । একসময় এসে এ মিলাদের সাথে যোগ হয় ঈদ । হয়ে যায় ঈদে মিলাদুন্নবী বা নবীর জন্ম দিবস উপলক্ষে খুশির উৎসব ।

 

 

এভাবে চলতে চলতে আরো ছয় শত বছর পর ইংরেজদের শাসনামলে লাহোরে হাজী এনায়েতুল্লাহ এবং মৌলভী মজিদ সাহেবদের নেতৃত্বে শুরু হয় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী । অর্থাৎ নবীর জন্ম দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য মিছিল। আর বাংলাদেশ জশনে জুলুস আসে ১৯৭৪ ইং সালে পাকিস্তানের সিরকোর দরবারের ভন্ড পীর তায়্যিব শাহ এর নির্দেশে । পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে আঞ্জুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট । এভাবে আরো চলতে চলতে যুক্ত হয় কথিত সুন্নি নামের আরো বেশ কিছু আলেম । এরপরে ছড়িয়ে যায় বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ।

 

 

মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ ‌?

 

প্রচলিত ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা জায়েজ নয় । নিঃসন্দেহে এটি একটি বিদআত । তবে সাধারণত নবীজিকে নিয়ে বাড়াবাড়ি ছাড়া কোথাও কোন আলোচনার আয়োজন হলে দোষণীয় নয় । কেননা পৃথিবীতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন নিঃসন্দেহে মানবতার ইতিহাসে এক মহা ঘটনা ।

 

এর চেয়ে বড় ,এর চেয়ে মহান, এর চেয়ে আনন্দের, এর চেয়ে বেশি বরকতময় এবং এর চেয়ে বেশি পবিত্র ঘটনা এ জগতে আর ঘটেনি এবং কেয়ামত পর্যন্ত ঘটবেও না । মানবতার জন্য নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর শিক্ষার আলো লাভ হয়েছে । তার পবিত্র সত্তার বরকত নসীব হয়েছে । এটা এত বড় ঘটনা যে ইতিহাসের কোন ঘটনাই এত বড় হতে পারে না ।

 

যদি ইসলামে কারো জন্মোৎসব পালন করা হতো তাহলে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর জন্মদিন থেকে উত্তম কোন দিন পাওয়া যাবে না যেদিনে উৎসব পালন করা যাবে ও তাকে ঈদ হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে । অথচ নবুওয়াতের পর তিনি ২৩ টি বছর দুনিয়াতে অবস্থান করেছেন এবং প্রত্যেক বছরের রবিউল আউয়াল মাস এসেছে । স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১২ই রবিউল আউয়ালকে জন্ম দিবস হিসেবে পালন করেননি । বরং তার কোন সাহাবীও ১২ রবিউল আউয়ালে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মদিন বিশেষ পদ্ধতিতে উৎসব পালন করেননি ।

 

চার মাযহাবের ইমামগণ , বিশেষ করে ইমাম আবু হানিফা রহ,ইমাম মালেক রহ: ইমাম শাফেয়ী রহ: ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ: পালন করেননি । প্রসিদ্ধ কুতুবে সিত্তার ইমামগণ পালন করেননি। তাহলে বর্তমানে যে সব আলেম ঈদে মিলাদুন্নবীর পক্ষে অবস্থান করছে তারা কি ঐ সব মনীষীদের চেয়ে বেশি হাদীস বুঝেছে ? বেশি আমল করছে ? কখনোই নয় । সেটা সম্ভবও নয় । নবীজির জীবন নিয়ে আলোচনা করতে চান তাহলে সারা বছর করুন । নবীজির আলোচনা শুধু রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে নির্ধারিত করে করা হবে কেন ? তার সিরাত তো মাহফিলে ,মসজিদে ,অফিস, ঘরে ,মাঠে ময়দানে সর্বত্র হওয়া উচিত। এবং বরকত লুফে নেওয়া উচিত । শুধু একটি দিন বা একটি মাসকে তার আলোচনার জন্য খাস করে নেওয়া কতটুকু যৌক্তিক ?

 

 

রবিউল আউয়াল ও সাহাবায়ে কেরাম

 

নবুয়ত প্রাপ্তির ২৩ বছর পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুনিয়া থেকে পরজীবনে তাশরিফ নিয়ে যান । প্রায় শোয়া লক্ষ সাহাবায়ে কেরাম দুনিয়াতে রেখে যান । এসব সাহাবায়ে কেরাম সদা সর্বদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আঙ্গুলের ইশারায় স্বীয় প্রাণ উৎসর্গ করে দিতে তৈরি ছিলেন ।

 

নবীজির জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ ।‌ তার জন্য উৎসর্গ ,তার সত্যিকার প্রেমিক ছিলেন । এতটা সত্বেও এমন একজন সাহাবীও খুঁজে পাওয়া যাবে না যিনি গুরুত্বের সাথে এই দিনটির উৎসব পালন করেছেন, কিংবা অন্তত পক্ষে এদিনে একটি সাধারণ মাহফিল করেছেন, কিংবা কোন মিছিল বের করেছেন বা আলোকসজ্জা করেছেন অথবা পতাকা উড়িয়েছেন ।

 

তারা কেন এমন করেননি ? কারণ ইসলাম কোন প্রথাগত দীন বা ধর্ম নয়, যে কয়েকটি অনুষ্ঠান পর্ব উদযাপন করে নিলেই চলবে । যেমন অন্যান্য ধর্মের লোকেরা কয়েকটি প্রথাগত অনুষ্ঠান করে ধর্মীয় কর্তব্য ইতি টানে । ইসলাম হলো আমলের ধর্ম । জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রত্যেকটি মানুষ নিজ জীবনের সংশোধনের ভাবনায় থাকবে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র সুন্নতের অনুসরণের লেগে থাকবে ।

 

 

খ্রিষ্ট জন্মোৎসব শুরু

 

জন্মাৎসব পালনের এ ধারণা মুসলমানদের দেশে খ্রিস্টানদের থেকে এসেছে । হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের দিনকে খ্রিষ্ট জন্মোৎসব নামে ২৫ ডিসেম্বর উৎসব উদযাপন করা হয় । ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায় হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে আকাশে উঠিয়ে নেওয়ার পর থেকে প্রায় ৩০০ বছর পর্যন্ত হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিনে উৎসব পালনের কোন নাম গন্ধ ও ছিল না ।

 

তার হাওয়ারীরা বা সাহাবায়ে কেরামের কিছু লোক এটা আবিষ্কার করে এবং বলে যে আমরা ঈসা আলাইহিস সালামের জন্ম দিবস উদযাপন করব । তখনও ঈসা আলাইহিস সালামের পূর্ণ অনুসারীরা এদেরকে বলেছিল যে তোমরা সিলসিলা কেন আরম্ভ করলে ?

 

হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের শিক্ষাতে তো জন্মদিন পালন করার কোন কথা নেই । তারা উত্তর দিল এতে ক্ষতি কি ? আমরা তো আর খারাপ কিছুই করছি না । আমরা এই দিনে একত্রিত হবো এবং হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জীবনী আলোচনা করব ।

 

মানুষকে তার শিক্ষা স্মরণ করিয়ে দেবো । এর দ্বারা মানুষের মাঝে তার শিক্ষার উপর আমল করার আগ্রহ সৃষ্টি হবে । এটা করে তো আমরা কোন গুনাহের কাজ করছি না । এই বলে হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মোৎসব উদযাপনের সিলসিলা শুরু হয়ে গেল ।

 

 

জন্মোৎসবের বর্তমান অবস্থা

 

প্রথম প্রথম ২৫ শে ডিসেম্বর গির্জায় লোকজন হাজির হত । একজন পাদ্রী দাঁড়িয়ে হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের শিক্ষা ও তার জীবনী আলোচনা করতো । এরপর মজলিস শেষ করে দিত যেন একবারে গোনাহ মুক্ত অবস্থায় সহীহ তরীকায় এ সিলসিলা আরম্ভ হল ।কিন্তু কয়েক বছর পর তারা ভাবল আমরা তো পাদ্রির ওয়াজ করিয়ে দেই কিন্তু এটা কেমন যেন এক আয়োজন হয়।

 

 

তাই এই উৎসবকে আকর্ষণীয় করতে সুর দিয়ে গজল ,কবিতা পড়া শুরু হলো । অতঃপর তারা ভাবল কেবল সুরেও চলবে না । এবার এর মাঝে কিছু নাচ গানও থাকতে হবে । তাই এর মধ্যে নাচ-গান অন্তর্ভুক্ত করল । তারপর চিন্তা করল কিছু রংতামাশাও হওয়া উচিত । কাজেই এবার হাসি তামাশা শুরু করা হলো ।

 

 

এভাবে ক্রমান্বয়ে যে জন্মোৎসব হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের শিক্ষার আলোচনা দিয়ে আরম্ভ হয়েছিল তা সাধারণ উৎসবের ন্যায় একটি উৎসব হয়ে দাঁড়ালো । আর এর ফল এই দাড়ালো যে গান আছে, মদ পান করা আছে অর্থাৎ দুনিয়ার সব অশ্লীলতা ও আবর্জনা ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মোৎসবের মাঝে সামিল হয়ে গেল । আর ঈসা আলাইহিস সালাম এর শিক্ষা অনেক দূরে ছিটকে পড়ে গেল ।

 

 

মিলাদুন্নবীর আরম্ভ

 

মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষের সঠিক অবস্থা ও তার দুর্বলতা সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন । আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয়ই এই কথা জানেন যে যদি মানুষকে সামান্য সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে তারা অধমপথে পৌঁছে যাবে । তাই ইসলামে জন্ম দিনের উৎসব পালনের কোন সুযোগই রাখেননি । যেভাবে খ্রীষ্ট জন্মোৎসব শুরু হয়েছে এমনভাবে মুসলমানদের কোন বাদশার মনে ধারণা আসলো যে খ্রিস্টানরা যখন তাদের নবী ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মদিন পালন করে তাহলে আমরা আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মদিন উৎসব কেন পালন করব না ?

 

পড়ুন – রবিউল আওয়াল মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত

 

এই ধারণায় এ বাদশা মিলাদের সিলসিলা শুরু করে দিল । প্রথম প্রথম এখানেও কেবল মিলাদ হতো । যার মাঝে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মের আলোচনা হতো । জীবনী আলোচনা হত । নবীজির প্রশংসামূলক কিছু নাত পাঠ করা হতো । কিন্তু বর্তমানে এটা এক চরম এক অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে ।

 

 

এটা হিন্দুয়ানী উৎসব

 

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন তো একটি মুজেজা হল ইসলাম ধর্মে অন্যান্য ধর্মের মত এত অশ্লীলতা প্রবেশ করেনি ‌। কিন্তু এরপরেও দেখা যায় রবিউল আউয়ালে রাস্তায় কি সব হচ্ছে ? রওজা শরীফের নমুনা বানানো হচ্ছে ,কাবা শরীফের নমুনা দাঁড় করানো হচ্ছে, লোকজন তার চতুর্দিকে তাওয়াফ করছে ,এর চারদিকে রেকর্ডিং হচ্ছে , চারপাশে বাতি জ্বালানো হচ্ছে ।

 

পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে ,জশনে জুলুসের নামে তথাকথিত আশেকে রাসুলরা মহিলাদের দিয়ে মিছিল করাচ্ছে । এগুলো দেখলে মনে হয় এটা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সিরাতের কোন উৎসব বা মিছিল নয় বরং যেভাবে হিন্দু ও খ্রিস্টানেরা সাধারণ কোনো উৎসব করে এটাও সে রকম একটি উৎসব । ধীরে ধীরে এর মাঝে সব রকমের অশ্লীল কাজ ও কুসংস্কার প্রকাশ করে চলেছে। যা ইসলামের সাথে কোনোভাবেই যায় না ।

 

 

প্রচলিত মিলাদুন্নবী উদযাপন

 

মিলাদুন্নবী উদযাপনকারীরা অনেক বাড়াবাড়ি করে থাকে । হাস্যকর দলীল উপস্থাপন করে ।‌ মূলত ওরা কোরআন সুন্নাহর দলীল মানতে চায় না । নিজের মতবাদকেই আঁকড়ে ধরে চলতে চায়। এজন্যই তো দেখা যায় ১২ রবিউল আউয়াল এলে ঘরে ঘরে দোকানে দোকানে চাঁদা কালেকশন শুরু করে । অনেক মসজিদে অতিরিক্ত আলোকসজ্জা করা হয় ।

 

সড়কগুলোতে রংবেরঙের পতাকা ও সোভা পেতে থাকে । রাস্তার মোড়ে মোড়ে তোরণ নির্মাণ করা হয় । কোথাও কোথাও কাবা শরীফের প্রতিকৃতি স্থাপন করে তার উপর তাওয়াফ করা হয় । আবার কোথাও কোথাও রওজা শরীফের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয় ।

 

 

যুবতী মেয়েদের দিয়ে নবীর জন্ম দিবসকে স্বাগত জানানোর জন্য রাজপথে মিছিল ও শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং পত্রপত্রিকায় সেসব ছবি ফলোও করে প্রচার করা হয় । উল্লিখিত ঐ সমস্ত কর্মের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই ‌। এগুলো করার দ্বারা সাওয়াব হওয়া তো দূরে থাক গুনাহ কামাই করতে থাকে । মিলাদুন্নবী যদি সত্যিকার অর্থে উদযাপন করতে হয় তাহলে সাহাবায়ে কেরামের মত করে উদযাপন করতে হবে। আর সাহাবায়ে কেরামের রীতিনীতিতে কোন জলসা জুলুস নেই ।

 

পড়ুন – তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

মাথা ব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায়

 

কোনো আলোকসজ্জা নেই । কোন পতাকা উড়ানো নেই ।কোন সাজসজ্জা নেই । তবে একটি জিনিস তাদের মধ্যে ছিল । আর তা হল রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‌এর পবিত্র জিন্দেগী তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গাঁথা। নবীর পবিত্র সিরাতের সাথে তাদের জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িত । তাদের প্রত্যেকটি দিন পবিত্র সিরাতের দিন । তাদের প্রতিটি মুহূর্ত তাদের প্রতিটি কাজ পবিত্র সিরাতের কাজ । তাদের কোন একটি কাজ এমন ছিল না যার মাঝে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লামের সিরাত বা আদর্শ নেই ।

 

দুনিয়াতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর আগমনের মাকসাদ কি ছিল ? আর ওরা আশেকে রাসূলের স্লোগান তুলে আজ কি সব করছে ! অথচ কোরআন স্পষ্ট করে বলছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের উদ্দেশ্য ।

لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰہِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰہَ وَالۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَذَکَرَ اللّٰہَ کَثِیۡرًا ؕ

 

অনুবাদ:যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। (আল আহ্‌যাব – ২১)

 

 

লিখনে: মাওলানা শরিফ আহমাদ

লেখক ও শিক্ষক

 

 

 

 

 

ঈদে মিলাদুন্নবী
ঈদে মিলাদুন্নবী কত তারিখ
ঈদে মিলাদুন্নবী ছুটি
ঈদে মিলাদুন্নবী কবে
ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি
ঈদে মিলাদুন্নবি

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২ কত তারিখ

ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২ কত তারিখ ছুটি
ঈদে মিলাদুন্নবী নামাজ কত রাকাত
ঈদে মিলাদুন্নবী কবে ২০২১

ঈদে মিলাদুন্নবী স্ট্যাটাস

ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে স্ট্যাটাস

ঈদে মিলাদুন্নবী উক্তি
ঈদে মিলাদুন্নবী কত তারিখ
ঈদে মিলাদুন্নবী ছুটি
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২২
ঈদে মিলাদুন্নবী কবে
ঈদে মিলাদুন্নবী কবে ২০২২
মিলাদুন্নবী স্ট্যাটাস

ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে উক্তি

ঈদে মিলাদুন্নবীর শুভেচ্ছা
ঈদে মিলাদুন্নবী বাণী
ঈদে মিলাদুন্নবী কি
ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন
ঈদে মিলাদুন্নবী শুভেচ্ছা
ঈদে মিলাদুন্নবী কেন পালন করা হয়
ঈদে মিলাদুন্নবী ২০২১ এর ছুটি কবে
ঈদে মিলাদুন্নবী ছুটি কবে ২০২১
ঈদে মিলাদুননবী
ঈদে মিলাদুন্নবী সা

ঈদে মিলাদুন্নবী সরকারি ছুটি
ঈদে মিলাদুন্নবীর রোজা
ঈদে মিলাদুনবী
ঈদে মিলাদুন্নবী কি
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি জায়েজ
ঈদে মিলাদুন্নবী কি বিদাত
ঈদে মিলাদুন্নবী কি ও কেন
ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন কি রোজা রাখা যাবে
ঈদে মিলাদুন্নবী কি করনীয়

 

ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি
ঈদে মিলাদুন্নবী শব্দের অর্থ কি
ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা কি বিদআত
ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে ইসলাম কি বলে
ঈদে মিলাদুন্নবী কি জায়েজ
ঈদে মিলাদুন্নবীর

 

 

ঈদে মিলাদুন্নবী কেন পালন করা হয়
ঈদে মিলাদুন্নবী কেন হয়
ঈদে মিলাদুন্নবী কেন
ঈদে মিলাদুন্নবী শুভেচ্ছা
ঈদে মিলাদুন্নবী কবিতা

 

 

Related Articles