বক্তব্য

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে বক্তব্য

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে বক্তব্য

 

 

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পরিচিতি

 

প্রতিবছর ১২ ডিসেম্বর পালিত হয় ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস । রাষ্ট্রীয়ভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর দিবসটি পালনের মধ্যে গ্রহণ করে । এ দিবসের পূর্ব নাম আইসিটি বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দিবস । ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের ঘোষণা দেন ।

এবং ২০১৮ সালে ২৬ নভেম্বর আইসিটি দিবসের নাম পরিবর্তন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের নাম চূড়ান্ত করা হয় ‌। এরপর থেকে প্রতিবছর গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি উদযাপন করা হয় ।

 

 

বক্তব্য শুরু করার নিয়ম

 

সুপ্রিয় সুধিমন্ডলী ! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ । আশা করছি সকলে ভালো এবং সুস্থ আছেন । সকলে আরো ভাল এবং সুস্থ থাকুন এই কামনা করে শুরু করছি ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য । বক্তব্যের শুরুতেই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ব্যস্ততার ভিতরেও যারা এই সুন্দর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন । ধন্যবাদ জানাচ্ছি সম্মানিত পরিচালকসহ অন্য সবাইকে ।

 

বক্তব্য সম্প্রসারণ করার নিয়ম

 

আলোচনা সুবিধার্থে আমি আপনাদের প্রথমেই ডিজিটাল শব্দ নিয়ে কথা বলতে চাই । Digital মূলত একটি ইংরেজির শব্দ । এর একাধিক অর্থ এবং ব্যাখা রয়েছে । এক কথায় সহজ করে বলি । Digital অর্থ হল সহজ, সঠিক, দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যম কিংবা প্রযুক্তি ।ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রথম উচ্চারিত হয়েছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ থেকে । তিনি ২০০৮ সালের ১২ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনে ইশতেহারে বলেছিলেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ছিল- একটি উন্নত দেশ ,সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ , রূপান্তরিত উৎপাদন ব্যবস্থা ,নতুন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির প্রবর্তন । মোটকথা একটি জ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক দেশ গঠন করা । ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল স্তম্ভ হল চারটি ।

১. মানব সম্পদ উন্নয়ন ।

২. ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া ।

৩. ই প্রশাসন ব্যবস্থা ।

৪. তথ্য প্রযুক্তি শিল্প খাত গড়ে তোলা ।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন । এবং success হয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে । যা অন্য কোন সরকার করতে পারেনি ।

 

বক্তব্যে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ

 

সম্মানিত উপস্থিতি ! আপনারা অবগত আছেন করোনা ভাইরাসের তীব্র আক্রমণ এবং বর্তমানে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ । বিশ্বের উন্নত দেশগুলো প্রায় মাথা থুবড়ে পড়েছে । কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হিম্মতের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছেন । বাস্তবায়ন করছেন তার স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ।

মিডিয়ার কল্যাণে আপনারা ইতোপূর্বে জানতে পেরেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কি কি উন্নয়ন হয়েছে দেশের । সেই তালিকা উল্লেখ করা সময় নষ্ট করতে চাই না । শুধু এতোটুকু বার্তা আপনাদের আবার স্মরণ করে দিতে চাই,

জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমার কাছে ক্ষমতা মানে হচ্ছে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করা ।জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করা । মাত্র এক যুগের ব্যবধানে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়া ,অর্থনীতিতে দ্রুত বর্ধনশীল শীর্ষর দেশের তালিকা করা নেওয়া , দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ,এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়ন ,পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমানিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর ,ঢাকা মেট্রোরেল ,চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল এবং ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণসহ দেশের মেঘা প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন- এ সবই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে প্রধানমন্ত্রীর ক্যারেশমেটিক ও দূরদর্শী সফল নেতৃত্বের সুফল ।

 

 

বক্তব্য শেষ করার নিয়ম

 

উপস্থিত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ ! চামচিকা নাকি সূর্যের আলো দেখতে পারে না। এটা তার সমস্যা,সূর্যের নয় । তদ্রূপ যারা সরকারের উন্নয়ন দেখে না এটা তাদের চোখের সমস্যা, সরকারের নয় ।

আসলেই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করা ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এবং অর্জন ও অনেক । দুর্নীতি বাজদের অপসারণ করলে উন্নতির আরো শীর্ষে পৌঁছতে পারতো বলে আমার বিশ্বাস ।

যাই হোক ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্জনের দীর্ঘ তালিকা থেকে দু একটি তথ্য বলে আমি আমার বক্তব্য শেষ করব ।

বক্তৃতা বড় করার নিয়ম

১. বর্তমানে ওয়েবসাইট বা ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও দিকনির্দেশনা সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে ।‌

২. সরকারি সেবা ও তথ্য বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দেশে তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি সরকারি মোবাইল হেল্প ডেস্ক । এই যেমন

(ক)সরকারি তথ্য ও সেবা বিষয়ক হটলাইন: ৩৩৩ ,

(খ)জরুরী সেবা ( পুলিশ,ফায়ার সার্ভিস ও এম্বুলেন্স )

বিষয়ক হটলাইন: ৯৯৯

(গ) শিশু ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ হটলাইন: ১০৯

(ঘ) দুদক হটলাইন: ১০৬

(উঃ) দুর্যোগের আগাম বার্তা হটলাইন: ১০৯০

৩. বর্তমানে বাংলাদেশের নাগরিকরা অনলাইনে আবেদন করে ৬৪ টি জেলায় স্থাপিত ই- সেবা কেন্দ্র থেকে জমি-জমা সংক্রান্ত বিভিন্ন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারে ।

৪. সকল শ্রেনীর পাঠ্য পুস্তক অনলাইনে সহজে প্রাপ্তির জন্য সরকারীভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ই-বই প্ল্যাটফরম তৈরি হয়েছে।

 

ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে বক্তব্য

 

৫. ব্যাপক ইন্টারনেট সংযোগের ফলে দেশে গড়ে উঠেছে অনেক অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষা প্লাটফর্ম।‌ এর ফলে পোস্টাল ক্যাশ কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং, ইলেকট্রিক মানি ট্রান্সফার ইত্যাদির মাধ্যমে বর্তমানে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অর্থ প্রেরণ তুলনামূলক সহজ ও দ্রুততর হয়েছে।

বর্তমানে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ,পানি ও গ্যাস বিল অনলাইনে কিংবা মোবাইলে মাধ্যমে দিতে পারছে । সকল পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ, স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির আবেদন, পরীক্ষার নিবন্ধন, চাকরির আবেদন, জন্ম নিবন্ধন,সকল বাস,ট্রেন ও বিমানের টিকেট সংগ্রহ প্রযুক্তির মাধ্যমে করা যাচ্ছে। এগুলো সবই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ফসল। আওয়াজ করে বলেন ঠিক কিনা।

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। সবাইকে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা শোনানো উচিৎ।

গুরুত্বের এই দিবসের কার্যক্রম করা উচিত। আজকের এই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ। সময় নিয়ে আমার বক্তব্য শোনার জন্য আপনাদের সবাইকে আবারো ধন্যবাদ। এখানেই আমি আমার কথা শেষ করছি।

জয় বাংলা…………..

ডিজিটাল বাংলাদেশ………

 

বি:দ্র: উপরোক্ত বক্তব্যটিতে মূলত একটু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ভালো লাগলে নোট করতে পারেন। কথা বাড়িয়ে বা কমিয়ে বক্তব্য দিতে পারেন। সময়ের দিকে খেয়াল রেখে বক্তব্য দিবেন । এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় ।

 

 

লিখনে: শরিফ আহমাদ

লেখক ও শিক্ষক

 

 

 

 

 

 

Related Articles