রেজাল্টকলেজবিশ্ববিদ্যালয়

পরীক্ষায় ভালো করার উপায় কী ?

পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ । আশা করি সবাই ভালো আছেন । আজকে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে যেকোন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা যায় ।

 

পরীক্ষা তো সবাই দেয় । সবাই আশাও করে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার । কিন্তু সবাই কি তা পারে ? কিন্তু কেন পারে না ?

অনেকেই বলে ভাই আমি চাকরির পরীক্ষায় ভালো করতে চাই ? চাকরির পরীক্ষায় ভালো করার উপায় কী ? 

 

ভাইবা পরীক্ষায় ভালো করার উপায় কী ? এস এস সি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায় সহ বিভিন্ন পরীক্ষায় কিভাবে ভালো ফলাফল করা যায় সে বিষয়েই আজকের আলোচনা সাজিয়েছি ।

যদি পুরো লেখাটি মনোযোগ সহকারে পড়েন ।এবং মেনে চলেন তবে, আমি আশা করি আপনি যেকোন পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ ।

 

তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করি পরীক্ষায় ভালো করার উপায় নিয়ে।

সূচিপত্র

পরীক্ষা কী ও কেন ?

ছোট্ট একটি শব্দ পরীক্ষা । কিন্তু কত মর্ম ও তাৎপর্য রয়েছে শব্দটিতে । পরীক্ষার আরবী শব্দ ইমতিহান । আর ইংরেজি examination ।

অভিধান বলছে পরীক্ষা অর্থ– ভাগ্যের শুভাশুভ নির্ণয়, বিদ্যাচর্চায় পারদর্শিতা নির্ণয় ইত্যাদি । পরিভাষায় কোনো ধারণাকে সমর্থন, খণ্ডন বা যাচাই করার জন্য কার্যপ্রণালীকে পরীক্ষা বলে।

 

পৃথিবীতে পরীক্ষা কখন শুরু হয়েছে তা নিয়ে গবেষকদের নানান মন্তব্য  থাকলেও একথা নিশ্চিত যে পরীক্ষার প্রথা স্বয়ং আল্লাহ তাআলা করেছেন । আল্লাহ পাক আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করার পর ফেরেশতাদেরকে বললেন, তোমারা আদমকে সিজদা করো।

 

কেননা তোমাদের জ্ঞানের চেয়ে আদমের জ্ঞান অনেক বেশি।  (সুরা বাকারাহ: আয়াত নং ৩২-৩৩) আল্লাহর আদেশে সব ফেরেশতা আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা করলো। কিন্তু শয়তান সেজদা করলো না ।

 

আল্লাহর আদেশ অমান্য করায় আল্লাহপাক শয়তানকে বেহেশত থেকে বিতাড়ন করলেন। আর আদম ও তার স্ত্রী হাওয়াকে জান্নাতে রাখলেন । এই যে আদম আলাইহিস সালাম এবং ফেরেশতাদের মাঝে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো ।
সম্ভবত এটাই প্রথম পরীক্ষা।  আদম আলাইহিস সালাম বিজয়ী  হলেন । ইবলিশ লাঞ্ছিত হল । আরবী একটি প্রবাদের মধ্যেও যেন এই কথাটি  বলা হয়েছে- ইন্নাল ইমতিহান ইকরামুর রাজুলু  আওউহান ।

 

পরীক্ষা নিয়ে পবিত্র কুরআনে আরো এসেছে,  মহামহিমান্বিত তিনি সর্বময় কর্তৃত্ব যাঁর করায়ত্ত , তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।

 

যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদিগকে পরীক্ষা করার জন্য কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।  (সূরা মুলক: আয়াত নং ১-২)
অতএব দুনিয়া-আখিরাতে পরীক্ষা হবেই । যুগে যুগে কমবেশি সবার হয়েছে । এবং ভবিষ্যতে আরো সকলের  হবে ইনশাআল্লাহ । পরীক্ষার মাধ্যমেই নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে । সম্মানিত হতে হবে ।

 

 

তাই পরীক্ষা এলেই আতঙ্ক নয় । পরীক্ষা এলেই ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা চিন্তায় আর কাবু নয় । পরীক্ষায় এলেই পূর্ণ প্রস্তুতিতে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে এবং সফলতার শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছতে হবে ।‌‌

 

 

পরীক্ষায় ভালো  প্রস্তুতির ৫ টি কার্যকারী উপায়ঃ

পরিক্ষায় ভালো প্রস্তুতির উপায়

১. পড়ার মাঝে বিরতি:

 

একটানা অনেকক্ষণ পড়ার চেয়ে বিরতি দিয়ে পড়া অনেক বেশি ভালো । কার্যকর পদ্ধতি । এক নাগাড়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে পড়লে পড়ায় মনযোগ ধরে রাখা যায় না।

 

 

এ কারনে টানা দীর্ঘ সময় না পড়ে পড়ার মাঝে অন্তত ৫ মিনিট বিরতি দিন। বিরতি নেওয়ার ফলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং পূর্ণ এনার্জি নিয়ে পড়া খুব সহজেই আয়ত্ত করা যায়।

২. রুটিন তৈরি করুন:

সঠিক প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন সঠিক সময় নির্দেশনা। এজন্য রুটিন করে পড়া অত্যন্ত জরুরি । প্রতিটি বিষয়ের জন্য পর্যাপ্ত সময় ভাগ করে নিয়ে একটি টাইম রুটিন তৈরি করুন ।

 

এতে করে সকল বিষয় যেমন সমান গুরুত্ব দেয়া যায় তেমনি পড়া ইয়াদ করা সহজ হয়।

৩. রাত জাগা পরিহার করুন:

 

পরীক্ষার সময় অনেকের রাত জেগে পড়ার অভ্যাস রয়েছে। এমনকি রঙ- চা বিস্কুট খেয়ে ঘুম তাড়ানো লোকের সংখ্যা কম নয়।
কিন্তু এটা করা উচিত নয় । কেননা মস্তিষ্কে স্মৃতি তৈরীর কাজটি ঘুমের মধ্যে হয়। পরীক্ষার আগের রাতের ঘুম তাই অত্যন্ত জরুরী।

 

অতিরিক্ত রাত জাগা মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন করে। চোখের উপর ও বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই পরীক্ষার সময় রাত জাগা পরিহার করুন।

 

উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে রাতে আগে ঘুমিয়ে যাওয়া আর রাতের শেষাংশে উঠে তাহাজ্জুদ শেষে পড়ার অভ্যাস করা ।

৪. পড়া জমিয়ে রাখবেন না :

প্রবাদ আছে আজকা কাম কাল পর না ডাল । আজকের কাজ কালকের জন্য রেখো না । ঠিক এটি ফলো করা ।

 

 

সকল পড়া পরীক্ষার আগের রাতের জন্য জমিয়ে না রেখে প্রতিদিন অল্প অল্প পড়ুন। পরীক্ষার আগের রাতে সকল পড়া একসাথে পড়তে গেলে মানসিক চাপ বাড়বে ।
যা পরীক্ষায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্ততি হিসেবে নতুন কিছু না পড়ে আগে যা পড়া হয়েছে তাই রিভাইস করুন।

৫ . নিজের উপর আস্থা রাখুন:

আমার কিছু হচ্ছে না, আমার দ্বারা হবে না এ সমস্ত ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। নিজের উপর আস্থা রেখে সামনে এগিয়ে যান।

 

বারবার অনুশীলন করুন। পরীক্ষার উত্তরপত্রেও আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রশ্নের উত্তর লিখুন।কোনো ব্যক্তি যদি পরীক্ষার ব্যাপারে আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রেখে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

 

 

তাহলে সে অবশ্যই সফল হবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। (সুরা তালাক: আয়াত নং ৩)

দ্রুত পড়া মুখস্থ করার ৭ টি টেকনিক :

 

অনেকেই আমার কাছে জানতে চায় ভাই কিভাবে সহজে পড়া মুখস্ত করবো? পড়া মনে থাকে না আমার।  পড়া মনে রাখার উপায় কী?

 

দ্রুত মুখস্ত করার উপায়

এখন আমরা শিখবো কিভাবে দ্রুত পড়া মুখস্থ করা যায়।

১. পাপ থেকে দূরে থাকুন :

প্রতিনিয়ত পাপ করে যাওয়ার একটি প্রভাব হচ্ছে দুর্বল স্মৃতিশক্তি। পাপের অন্ধকার ও জ্ঞানের আলো কখনো একসাথে থাকতে পারে না।

 

ইমাম আশ-শাফি’ঈ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
আমি (আমার শাইখ) ওয়াকীকে আমার খারাপ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপকাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি।

 

 

তিনি বলেন, আল্লাহর জ্ঞান হলো একটি আলো এবং আল্লাহর আলো কোন পাপচারীকে দান করা হয় না। যখন কোনো মানুষ পাপ করে এটা তাকে উদ্বেগ ও দুঃখের দিকে ধাবিত করে।
সে তার কৃতকর্মের ব্যাপারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে তার অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায় এবং জ্ঞান অর্জনের মতো কল্যাণকর আমল থেকে সে দূরে সরে পড়ে।

 

তাই আমাদের উচিত পাপ থেকে দূরে থাকার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। নবীজিকে আল্লাহর শেখানো এই দুআ বেশি বেশি পড়া । রব্বি জিদনি ইলমা ।‌ (সুরা ত্বহা: আয়াত নং ১১৪)

২ . চেষ্টা অব্যাহত রাখা :

 

একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখবো যে সকলের মুখস্থ করার পদ্ধতি এক নয়। কারো শুয়ে পড়লে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়, কারো আবার হেঁটে হেঁটে পড়লে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়।
কেউ নীরবে পড়তে ভালোবাসে, কেউবা আবার আওয়াজ করে পড়ে। কারো ক্ষেত্রে ভোরে তাড়াতাড়ি মুখস্থ হয়, কেউবা আবার গভীর রাতে ভালো মুখস্থ করতে পারে।
তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজ নিজ উপযুক্ত সময় ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ঠিক করে তার যথাযথ ব্যবহার করা।

৩ . অন্যকে শেখানো:

মুখস্থকৃত বিষয়ের উপর আমল করা । বা আর একটি একটি উত্তম উপায় হলো তা অন্যকে শেখানো।
আর এজন্য একই বিষয় বারবার ও বিভিন্ন উৎস থেকে পড়তে হয়। এতে করে ঐ বিষয়টি আমাদের স্মৃতিতে স্থায়ীভাবে গেঁথে যায়।

 

৪ . দেখে দেখে পড়া:

মনে রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল যে কোন কিছু পড়ার সময় বিষয়টি মন দিয়ে দেখে খেয়াল করে পড়তে হবে।
আমাদের মস্তিষ্ক সব থেকে সহজে মনে রাখতে পারে চোখে দেখা বিষয় গুলো। কেননা যে কোন কিছু জিজ্ঞাস করা হলে সর্ব প্রথম ওই জিনিসের প্রতিচ্ছবি আমাদের চোখে ভাসে, ফলে সহজে বলা যায়া

 

৫. লিখে লিখে পড়া:

 

পড়া গুলো দ্রুত শিখার এবং মনে রাখার সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো পড়ার সময় লিখে লিখে পড়া।
লিখে লিখে পড়লে আমাদের মস্তিষ্ক ওই বিষয় কে স্থায়ী স্মৃতিতে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে।
তা ছাড়া মানুষ যে কোন কিছু লিখার সময় তার মনযোগ বেশি থাকে। এটা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি তৈরীতে সাহায্য করে।

 

 ৬. টার্গেট নিয়ে পড়ুন:

পড়ার সময় একটি টার্গেট নিয়ে পড়তে বসুন। যে বইয়ের কত পাতা পর্যন্ত বা কোন টপিক কত সময়ের মধ্যে শেষ করবেন তা ঠিক করে নিন। কখনো শুধু সময়ের টর্গেট করে পড়বেন না।
তখন দেখা যাবে সময় শেষ হয়ে যাবে কিন্তু পড়া শিখা বাকি থাকবে। তাই বইয়ের পাতা বা টপিক টার্গেট নিয়ে পড়ুন।
যে আমাকে বই এই টপিক টা শেষ করতে হবে যতক্ষণ লাগোক টপিক শেষ না করে পড়া থেকে উঠবোনা। তাহলে দেখবেন পড়া গুলো তাড়াতাড়ি শেষ হবে।
আপনারা পড়ছেন পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

৭. নিজেই নিজের শিক্ষক:

আপনি যখন একটি পড়া শেষ করেন তখন সেই পড়াটা আপনি নিজেই ধরুন।

 

যে আপনার শিখা পড়াটা কত টুকু হয়েছে, কি কি পড়লেন আর কি শিখলেন, কি মুখস্থ করলেন তা নিজে নিজে যাচাই করুন। নিজের পরীক্ষা নিজে নিন এবং নিজেকে যাচাই করুন।

পরীক্ষার সময় কি কি খাবেন ?

একটার পর একটা পরীক্ষা হওয়াতে ক্লান্তি চলে আসে । ভালো লাগে না পড়তে । তখন আপনি চাইলে নিজের ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি আরও বাড়াতে পারেন, সেই সাথে গভীর মনোযোগ এবং মেজাজও আরও উন্নত করতে পারেন।

 

সে জন্য ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করা আবশ্যক। বিশেষ করে বাধ্যতামূলক সকালের নাশতা করা । কেননা পুষ্টিকর খাবার দেহের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে ।

 

এবং মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা এবং একাগ্রতা আসে শক্তির পর্যাপ্ত ধারাবাহিক সরবরাহ থেকে ।

 

বাস্তবতায় দেখা যায় যে সমস্ত শিক্ষার্থী সকালের নাশতা ঠিকমত খেয়েছে তারা পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো করেছে।

পরিক্ষা ভালো করার উপায়  ­

কারণ পেট ভরা থাকায় তাদের মনোযোগ , বিভিন্ন তথ্য স্মরণ করতে সহজ হয়েছে। এ জন্য আপনার প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে দুধ, দই কিংবা ডিম খেতে পারেন ।

 

 

সেইসাথে নির্দিষ্ট সময়ে কোন একটি জলখাবার খাওয়ার কথা ভুলে গেলে চলবে না।

 

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার স্বল্প-স্থায়ী স্মৃতি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সেইসাথে বদলে দিতে পারে মুড।

 

বাদাম, স্ট্রবেরি, জলপাই, কুমড়োর বিচি এবং ডাক চকোলেট একইসঙ্গে দেহ এবং মনের খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এগুলো খেতে পারেন ।

পরীক্ষায় ভালো ফলাফল  করার ৫ টি আমল:

১. কঠোর পরিশ্রম :

পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসার পাশাপাশি অলসতা ত্যাগ করে নিজের সাধ্যানুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।

 

কেননা আল্লাহ তাআলা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের পরিশ্রম ও চেষ্টার ওপর ভিত্তি করে তাকে সফলতা দান করেন।

 

পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, আর সবার জন্যই তাদের কর্ম অনুসারে মর্যাদা রয়েছে। আর আল্লাহ যেন তাদেরকে তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিতে পারেন। আর তাদের প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না। (সুরা আল-আহকাফ: আয়াত নং ১৯)

 ২. সালাতুল হাজত পড়াঃ

পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার আগে দুই রাকাত সালাতুল হাজত পড়ে মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে বের হওয়া যেতে পারে।

 

কারণ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তখন সালাতুল হাজত বা প্রয়োজন পূরণের নামাজ পড়তেন। (আবু দাউদ: হাদীস নং ১৩১৯) এই নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সূরা পড়া জরুরি নয়।
বরং সাধারণভাবে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নিজ প্রয়োজনগুলো মহান আল্লাহর কাছে পেশ করা ও তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করা।

স্থিরতা বজায় রাখা :

পরীক্ষার টেনশনে অনেকে অস্থির হয়ে পড়েন। খুব বেশি তাড়াহুড়া করেন। ফলে সঠিকের ক্ষেত্রে ভুল উত্তরও দিয়ে বসেন।

 

আপনারা পড়ছেন পরীক্ষায় ভালো করার উপায়
ইসলাম তাড়াহুড়া পছন্দ করে না। কারণ এটি শয়তানের কাজ । রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ধীরস্থিরে কাজ করা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া করা শয়তানের পক্ষ থেকে। (সুনানে বায়হাকি: হাদীস নং ২০৭৬৭)

আল্লাহর নামে শুরু করা :

যেকোনো ভালো কাজই বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে শুরু করতে হয়। তাই পরীক্ষার্থীরাও প্রশ্নপত্র গ্রহণ করার পর বিসমিল্লাহ বলে উত্তরপত্র লেখা শুরু করতে পারেন।

পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করার আমল

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, যেসব কাজ আল্লাহর নাম না নিয়ে শুরু করা হয় সেগুলো বরকতশূন্য। সঙ্গে দরুদ শরিফও পাঠ করে নিতে পারেন।
কারণ কোনো ব্যক্তি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর একবার দরুদ পড়লে মহান আল্লাহ তার ওপর ১০ বার রহমত বর্ষণ করেন।

বেশি বেশি দুআ করা :

পরীক্ষায় সঠিক উত্তর প্রদানে মহান আল্লাহর সাহায্যের জন্য মনে মনে তাঁর কাছে দুআ করা । দুআর মাধ্যমে সবকিছু সম্ভব । দুআ আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ার মজবুত নেটওয়ার্ক

পরিক্ষায় নকল থেকে সাবধান

প্রশ্নপত্র ফাঁস করা যেমন অন্যায় তেমন নকল করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রতারণার শামিল। মুমিন বান্দা কখনো প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারে না।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে প্রতারণা করে সে আমার দলভুক্ত নয়।

 

(মুসলিম: হাদীস নং ১০২) যাকে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্বীকার করবে, সে কী করে সফল হবে? তা ছাড়া নকল করার কারণে পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার হল থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে।

 

যা তার নিজের জীবনে যেমন কালি লেপন করবে, তেমনি পরিবারের সম্মানও নষ্ট করবে। মনে রাখবেন সম্মান কামাই করা খুব কঠিন কিন্তু বিকিয়ে দিতে কয়েক মিনিটের ব্যাপার।।

চাকরীর পরীক্ষায় ভালো করার উপায়ঃ 

 

চাকরির পরিক্ষায় ভালো করার উপায়

চাকরীর পরীক্ষায় ভালো করতে হলেও এই একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে । তবে যে বিষয়ে আপনার চাকরির পদবী সেই বিষয়টিতে বেশী নজর দিতে হবে ।

 

ভাইবা পরীক্ষায় ভালো করার উপায়ঃ

 

ভাইবা পরীক্ষা তে পাশ করতে হলে । আপনাকে একটু পরিপাটি হয়ে যেতে হবে । ভাইবা বোর্ডে থাকা স্যারদের প্রশ্নের উত্তর খুব সাধারন ভাবে দিতে হবে । নার্ভাস হলে চলবে না ।

শেষ কথা

পরীক্ষা পাস করার জন্য সত্যি আজ ছাত্র ও শিক্ষকদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। তার জন্য ছাত্ররা সাজেশন ও পরীক্ষায় প্রশ্নোত্তর খুঁজতে খুঁজতে ঘর্মাক্ত ।
শিক্ষকেরাও নিশ্চিত পাসের বাহারি বিজ্ঞাপন ভিত্তিক পাঠ্য-পুস্তক বাজারে ভেলিভারি করছে । ব্যবসায়িরা লাভবান হলেও আসলেই কি লাভবান হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা ?

 

পরীক্ষা কি মূল উদ্দেশ্য নাকি লেখাপড়া ? ভাবটা এমন যেন আসল উদ্দেশ্য কোনোমতে শুধু পরীক্ষাটা পাস করা, লেখাপড়াটা কিছুই নয়।

 

অন্তত সেটি গৌণ। এটাই হচ্ছে বড় সমস্যা । অভিভাবকেরাও হয়তো একটা জিনিস জানেন না যে , ছাত্ররা শুধু পরীক্ষার পড়া পড়তে গিয়ে পুরো বই কম পড়ে বা একেবারেই পড়ে না।
তাতে করে পরীক্ষার বেলায় সাজেশনের বাইরে সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তারা অকৃতকার্য হয়। এখন মোটা দাগের প্রশ্ন ছাত্ররা পড়াশোনা না শিখে কেবল পরীক্ষা পাসের জন্য উন্মুখ কেন? তার কারণ পরীক্ষা পাসের সার্টিফিকেট ।
সার্টিফিকেটে সাময়িক প্রশান্তি , বড় চাকরি হলেও সর্বক্ষেত্রে সার্টিফিকেট মানুষ কে মূল্যায়ন করে না ।
তাই প্রত্যেকটি পরীক্ষা হোক নিজেকে যোগ্য প্রমান করার জন্য । আলোকিত মানুষ হওয়ার লক্ষ্যে ।
আল্লাহ আমাদের অভিভাবকদের সত্যটা বোঝা ও পরীক্ষার্থীদেরকে সফলতা দান করুন। আমিন।

 

 

শিক্ষা বিষয়ক যে কোন তথ্য জানতে এবং জানাতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন  

 

ফেসবুক গ্রুপ

Related Articles