চোখ ওঠা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা | চোখ ওঠার দোয়া
চোখ ওঠা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা | চোখ ওঠার দোয়া
আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ ৷ সু প্রিয়! পাঠক সবাই কেমন আছেন? এই সময় সারাদেশে চোখ ওঠা রোগ ভাইরাস আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ৷ অসংখ্য মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৷ চলমান আর্টিকেলে আমরা চোখ উঠা রোগের কারণ, প্রতিকার এবং চোখ ওঠা রোগ থেকে মুক্তির দোয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবো ইনশাআল্লাহ ৷ শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন ৷
মাথা ব্যাথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
সূচিপত্র
চোখ ওঠা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা | চোখ ওঠার দোয়া
কনজাংটিভাইটিসের(চোখ ওঠা) সিজন এখন। চারদিকে প্রচুর লোকজন আক্রান্ত এই রোগে। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন হাত, চোখ পরিষ্কার রাখতে। পরিষ্কার করা ছাড়া চোখে হাত দিবেন না। চোখকে ধুলাবালি থেকে মুক্ত রাখুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু সাথে সাথে রাখুন। আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে আসা পরিহার করুন। এটি কিন্তু অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে।
চোখ ওঠা রোগে কী করবেন?
চোখ যে শুধু মনের কথা বলে তা নয়, চোখ আপনার রোগের কথাও বলে। চোখের সাদা অংশটি লালচে হলে, চোখ দিয়ে পানি পড়লে, প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস বলে।
চোখ ওঠার লক্ষণ ও উপসর্গ
- ১. চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে যাওয়া;
- ২. চোখের পাতা ফুলে যাওয়া;
- ৩. চোখ দিয়ে পানি পড়া;
- ৪. চোখে জ্বালাপোড়া করা, খচখচ করা;
- ৫. ঘুম হতে ওঠার পর চোখের দুই পাতা একসঙ্গে লেগে থাকা;
কীভাবে চোখ উঠার জীবাণু ছড়ায়
- ১. চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এটি হয়। অপরিষ্কার হাত, আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শে, আক্রান্ত ব্যক্তির তোয়ালে, গামছা ব্যবহারে চোখ উঠতে পারে।
- ২. অ্যালার্জি ধুলাবালির মাধ্যমে;
চোখ ওঠা রোগের চিকিৎসা
যেসব কারণে চোখ ওঠে, সেসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে।
- ১. হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং চোখের পাতাগুলো খোলা রাখতে হবে।
- ২. চোখে কালো চশমা পরতে পারেন।
- ৩. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ভিটামিনযুক্ত খাবার খান।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
- ১. যখন আপনার চোখ থেকে ঘন হলুদ কিংবা সবুজাভ হলুদ রঙের ময়লা পদার্থ বের হয়;
- ২. চোখ ব্যথা থাকলে;
- ৩. চোখে ঝাপসা দেখতে পেলে অথবা দেখতে সমস্যা হলে;
- ৪. চোখের সাদা অংশ ফুলে উঠলে কিংবা লাল হয়ে গেলে।
যা করবেন না
১. কোনো চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া চোখের ড্রপ ও ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
চোখ ওঠা রোগের প্রতিকার
- ১. চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে রোগ। পরিবারের একজনের থেকে অন্যজনের হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিবারের সবাই কাপড়, তোয়ালে ও অন্যান্য জিনিস আলাদা ব্যবহার করুন।
- ২. চোখে হাত দেবেন না;
- ৩. ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ভালোমতো পরিষ্কার করুন;
- ৪. যেসব জিনিসে অ্যালার্জিক তা থেকে দূরে থাকুন;
- ৫. সাথে জ্বর সর্দি কাশি থাকলে তার চিকিৎসা নিন।
- ৬. আক্রান্ত হলে ঘরে বিশ্রাম নিন।
ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত চোখ কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায় ঠিক, কিন্তু আশপাশে অনেককেই আক্রান্ত করে বা করতে পারে। তবে চোখ ওঠা রোগী মূলত সে তার নিজের জন্য সমস্যা নয়, বরং অন্যের জন্য সমস্যা। সর্বপরি সাবধানে থাকার চেষ্টা করুন।
আর আক্রান্ত যারা যাচ্ছেন তারা সবসময় চোখে সানগ্লাস ব্যাবহার করুন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু/রুমাল রাখুন।বিনা প্রয়োজনে চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকুন। কনজাংটিভাইটিস কিন্তু অতিমাত্রায় ছোয়াছে। হাত সবসময় পরিষ্কার রাখুন। আর আপনার ব্যাবহৃত রুমাল/টিস্যু যেখানে সেখানে ফেলা থেকে বিরত রাখুন।
সর্বপরি সবাই সাবধানে থাকার চেষ্টা করুন!
চোখ ওঠার দোয়া
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِىْ وَ شَرِّ بَصَرِىْ وَ شَرِّ لِسَانِىْ وَ شَرِّ قَلْبِىْ وَ شَرِّ مَنِيِّىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি সাময়ি ওয়া শাররি বাসারি ওয়া সাররি লিসানি ওয়া সাররি ক্বালবি ওয়অ সাররি মানিয়্যি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার কানের অপকারিতা, চোখের অপকারিতা, জবানের অপকারিতা, অন্তরের অপকারিতা এবং বীর্জের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাই। (মিশকাত, আবু দাউদ)
সুতরাং যাদের চোখে সমস্যা বা অসুস্থতা রয়েছে তারা শুধু এভাবে বলবে-
اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ بَصَرِىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি বাসারি।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আমার চোখের অপকারিতা থেকে আশ্রয় চাই।
শেষ কথাঃ
রোগ আল্লাহ দেন ৷ তিনিই সারিয়ে তোলেন ৷ অসুস্থতার মাধ্যমে বান্দাকে পরীক্ষা করেন ৷ তার গোনাহ মাফ করেন ৷ ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়তে হবে ৷
আমাদের আর্টিকেলগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন ৷ সাথেই থাকুন ৷