আলিয়া মাদ্রাসামাদ্রাসা

বাংলাদেশের সেরা ১০টি আলিয়া মাদরাসা

 

আলিয়া মাদরাসা

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ । কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । আজকে আমরা আলোচনা করবো দেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদরাসা নিয়ে । তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করি ।

 

সূচিপত্র

১. তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা

 

“তা’মীরুল মিল্লাত ট্রাস্ট” পরিচালিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা একটি যুগশ্রেষ্ঠ্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে ইসলামী ও আধুনিক শিক্ষার বাস্তব সমন্বয় সাধন করে ইসলামী আদর্শের বুনিয়াদে এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছে।

 

ইসলামী জীবনদর্শন, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ, অর্থনীতি, সমাজনীতি ও আন্তর্জাতিকবাদের সম্যক ধারণা দিয়ে মুসলিম সন্তানদেরকে আদর্শ নাগরিক রূপে গড়ে তোলা, বিশেষ করে নৈতিক অবক্ষয় থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করে চারিত্রিক উৎকর্ষ ও মূল্যবোধ তৈরীর বাস্তব উদ্যোগই হচ্ছে- “তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা”।

তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা

১৯৬৩ সালের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে মাদরাসাটির শুভ যাত্রা শুরু হয়। কালের বিবর্তনে মহান আল্লাহ্‌র মেহেরবাণীতে আজ তা পত্র-পল্লবে সুশোভিত হয়ে বিরাট মহীরূহে পরিণত হয়েছে।

 

মানসম্মত শিক্ষা ও নববী আদর্শ বিস্তারে তা‘মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা যখন সফলতার সাথে এগিয়ে চলেছে তখন দেশবাসির দাবী অনুযায়ী টঙ্গীতে আরো একটি বালক ও বালিকা ক্যাম্পাস এবং ঢাকার অদূরে মাতুয়াইলে একটি স্বতন্ত্র মহিলা ক্যাম্পাস করা হয়।

 

বর্তমানে মীরহাজিরবাগ মূল ক্যাম্পাসের সাথে আলাদা বালিকা শাখা চালু করা হয়েছে। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১০ সাল থেকে দুটি বিষয়ে ৪ বছর মেয়াদী ফাযিল সম্মান (অনার্স) কোর্স ও ১ বছর মেয়াদী মাস্টার্স খোলা হয়েছে।

 

যুগের চাহিদার সাথে সংগতি রেখে দাখিল ও আলিম স্তরে বিজ্ঞান ও আইসিটি বিভাগ এবং কামিল এম.এ শ্রেণীতে হাদীস, তাফসীর, ফিকহ ও আদব বিভাগ চালু করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত সকল পরীক্ষায় “তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার” সাফল্য উল্লেখযোগ্য। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের সেরা দশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় প্রতিষ্ঠানটি শীর্ষ স্থানে থাকার গৌরব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।

 

তামিরুল মিল্লাত মাদরাসার ওয়বে সাইট লিংক

তামিরুল মিল্লাত মাদরাসা

 

২। দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসা

 

১৯৮৮ সালে করিম জুট মিলস লি. এর পেশ ইমাম আলহাজ্ব মাওলানা রুহুল আমীন সাহেবের নেতৃত্বে এলাকার ১৮ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি হজ্বব্রত পালনের জন্য মক্কা শরীফ গমন করেন এবং হজ্বব্রত পালন শেষে কাবা শরীফের চত্বরে বসে শুরুরসী গোরস্থানের পাশে একটি দ্বীনি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা

মদীনা শরীফে গিয়েও তারা মাদরাসার জন্য দোয়া করেন। অতঃপর পরিকল্পনা মোতাবেক ১৯৮৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফুরফুরার মুজাদ্দিদে জামান হযরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দীকি আল কুরাইশী রহ. এর নাতী পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা আবুল আনসার মুহাম্মাদ আব্দুল কাহ্হার সিদ্দীকি রহ. মুজাদ্দিদে জামানের নামের সাথে মিলিয়ে নামকরণ করে দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সেই থেকে শুরু হয় এ মাদরাসার অবিরাম পথ চলা।

 

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার ডেমরা থানাধীন ডি. এন. ডি. প্রজেক্টের ভিতরে সারুলিয়া বাজার ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তী স্থানে শুকুরসী গোরস্থান সংলগ্ন প্রায় তিন একর জমির ওপর নৈসর্গিক মনোরম পরিবেশে দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার অবস্থান ।

 

দারুন নাজাত মাদরাসার শিক্ষাস্তর ও বিভাগ:

 

হাফেজী, ইবতেদায়ী, হাফিজে কুরআনদের জন্য তাখসীসী জামায়াত, দাখিল (সাধারণ ও বিজ্ঞান), আলিম (সাধারণ ও বিজ্ঞান), ফাযিল বি.এ. (পাস কোর্স), ফাযিল বি. এ. অনার্স ইন আল কুরআন এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ ও আল হাদীস এ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, কামিল এম. এ. (হাদীস) ২ বছর মেয়াদী।

 

দারুন নাজাত মাদরাসার শাখা প্রতিষ্ঠানঃ

 

• * তাখসীসি শাখা

• * দারুননাজাত মহিলা মাদরাসা

• * নেছারিয়া হেফজ খানা

• * ছালেহিয়া এতিমখানা

 

লক্ষ্য-উদ্দেশ্য: আমলদার ও কিতাবী আলেম তথা হক্কানী-রব্বানী আলেম তৈরির মাধ্যমে সৎ ও দক্ষ নাগরিক গঠন করা।।

 

বৈশিষ্ট্য: সুন্নাতে নববীর পূর্ণ অনুসরণ, দলীয় রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ, মাদরাসা শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়, পরিকল্পিত ও যুগোপযোগী ব্যবস্থাপনা।

 

শিক্ষক-কর্মচারী: ১৩৪ জন

ছাত্র সংখ্যা: প্রায় সাড়ে ছয় হাজার

একাডেমিক ভবন:সুবিশাল পাঁচ তলা অত্যাধুনিক একাডেমিক ভবন

 

গ্রন্থাগার : ইন্টারনেট সুবিধাসহ ৩০টি বিষয়ের ১৫০০০ এর অধিক পুস্তক সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার।

ছাত্রাবাস ভবন:২ টি ছয়তলা ও ২টি পাঁচতলা ভবনসহ অন্যান্য মোট ১৪টি

আ.খ.ম. আবুবকর সিদ্দীক
বি.এ. (অনার্স), এম.এ. (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়); এম.এম. (১ম শ্রেণি)

বর্তমান সভাপতি: জনাব মোঃ শহীদুল ইসলাম
জেলা প্রশাসক, ঢাকা

মাদরাসার ওয়েব সাইট লিংক 

দারুন্নাজাত কামিল মাদরাসা

 

 

৩.ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদরাসা

 

প্রখ্যাত আলেম হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আযীযুর রহমান কায়েদ সাহেব.১৯৫০ সালে ফোরকানিয়া মাদরাসা নামে এর কার্যক্রম শুরু করেন। সেই সময় ঝালকাঠি পৌর এলাকার বাসন্ডা গ্রামে একটি ক্ষুদ্র মক্তব হিসাবে যাত্রা শুরু করে বর্তমান এনএস মাদ্রাসাটি।

 

ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদরাসা

১৯৬১ সালে মাদরাসাটি দাখিল ও ১৯৮৬ সালে কামিল (হাদীস) পর্যায়ে উন্নীত হয়।

মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী (মাওলানা আযীযুর রহমান নেছারাবাদীর একমাত্র ছেলে) ১৯৯৪ সনে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে গভর্নিং বডি, শিক্ষকমন্ডলী ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার পরে বাংলাদেশের ইসলামী ও সাধারণ শিক্ষা জগতে দেশসেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

 

এই মাদ্রাসাটি ২০০৬ সালের ফাযিল ও কামিল ডিগ্রি প্রদানের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া অধিভুক্ত হয়। এবং ২০০৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার অধীনে স্থানান্তরিত হয়।

 

আপনারা পড়ছেন সেরা ১০ আলিয়া মাদরাসা

 

মাদ্রাসার দাখিল ও আলিমে পর্যায়ে বিজ্ঞান ও মানবিক উভয় শাখা চালু আছে। ফাযিলে ২টি বিষয়ে অনার্সের সুযোগ রয়েছে এবং কামিল পর্যায়ে হাদীস, তাফসীর ও ফিকহ বিভাগ রয়েছে।

 

মাদ্রাসায় ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি মাদ্রাসার আবাসিক হোস্টেলের ব্যবস্থা রয়েছে। আবাসিক ছাত্রদের জন্য বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক রয়েছে, ছাত্রদের সার্বক্ষণিক তদারকি করার জন্য তাদের মাদ্রাসার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিয়োগ করা হয়েছে।

 

৪. চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া 

 

বরিশাল জেলার চর মোনাই গ্রামে অবস্থিত একটি ইসলামি বিদ্যাপীঠ। ১৯২৪ সালে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক। প্রথমে এটি একটি আলিয়া মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

 

১৯৮২ সালে সৈয়দ ফজলুল করিম মাদ্রাসার কওমি শাখা চালু করেন। বর্তমানে কওমি এবং আলিয়া উভয় শাখা চালু রয়েছে। কওমি শাখার মুহতামিম সৈয়দ রেজাউল করিম এবং আলিয়া শাখার অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি।

চরমোনাই জামিয়া রাশিদিয়া আহসানাবাদ

ভারতের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির নামানুসারে মাদ্রাসার নামকরণ করা হয়েছে ‘জামিয়া রশিদিয়া’। ২০১৬ সালে আলিয়া শাখাটি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরস্কার লাভ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে মাদ্রাসাটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

 

 

১৯২৪ সালে এ মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক একাধারে শিক্ষকতা ও পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব পালন করেন। এটি ১৯৪৭, ১৯৫৩, ১৯৫৬ ও ১৯৭০ সালে যথাক্রমে দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল এর সরকারি মঞ্জুরী লাভ করে।

 

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক এ মাদ্রাসায় হাদিস, ফিকহ সহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ দান করেন। তার মৃত্যুবরণের পর তার পুত্র সৈয়দ ফজলুল করিম এ মাদ্রাসার পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্ব পালন করেন।

 

১৯৮২ সালে তিনি আলিয়ার পাশাপাশি কওমি শাখাও প্রতিষ্ঠা করেন। এ শাখায় দাওরায়ে হাদিস, ফতোয়া বিভাগ, কিতাব বিভাগ, হিফজ বিভাগ, কিরাতুল কুরআন খাছ বিভাগ, কিরাতুল কুরআন আম বিভাগ, রচনা ও প্রকাশনা বিভাগ, প্রশিক্ষণ বিভাগ এবং আদর্শ কুতুব খানা চালু রয়েছে ৷

 

 

জাতীয় শিক্ষাসপ্তাহ-২০১৬প্রতিযোগিতায় এই মাদ্রাসার আলিয়া শাখা জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাদ্রাসার পক্ষে অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সনদ ও গোল্ড মেডেল গ্রহণ করেন।

 

৫. তানযীমুল উম্মাহ মাদরাসা

 

তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত একটি অলাভজনক এবং অরাজনৈতিক সংস্থা; যা ১৯৯৯ সাল থেকে একটি শিক্ষা মিশন হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। অবারিত সম্ভাবনার এ বাংলাদেশের মানবসম্পদকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা, অবহেলিত মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন, আদর্শ মানুষ তৈরি, বেকারত্ব দূরীকরণে প্রকল্প পরিচালনা, জাতি গঠনে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ, আর্ত-মানব সেবা,

 

 

গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, ইসলামি সংস্কৃতির লালন ও বিকাশ সাধন, সুশিক্ষা বিস্তারে মননশীল প্রকাশনা, আলকুরআন শিক্ষার প্রচার ও প্রসারসহ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন। তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন এক বাস্তবসম্মত এবং সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। সে কর্মসূচির কয়েকটি বাস্তব পদক্ষেপ নিম্নে তুলে ধরা হল :

তানযীমুল উম্মাহ মাদরাসা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা

 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আপনি বলুন, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে?” (সূরা যুমার- ০৯) । শিক্ষা ছাড়া জাতিকে উন্নতির শিখরে পৌঁছানো সম্ভব নয়। শিক্ষিত জাতি মানেই উন্নত জাতি।

 

শিক্ষার জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সে লক্ষ্যে তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন ক্যাডেট মাদরাসা, প্রি-ক্যাডেট মাদরাসা, হিফয মাদরাসা, গার্লস মাদরাসা, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করছে।

 

তানযীমুল উম্মাহর বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম

 

সাপ্তাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা,জানা-অজানা অনুষ্ঠান,বার্ষিক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান,ফটবল,ব্যাডমিন্টন,ক্রিকেটসহ শরীয়ত সম্মত খেলাধূলা,সীরাতুন্নবী সা.মাহফিল,রচনা প্রতিযোগিতা,সুন্দর হস্তাক্ষর প্রতিযোগিতা,বিতর্ক প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা প্রকাশ,(আরবী,ইংরেজী ও বাংলা) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলাসহ সিডি,ভিসিডি প্রোগ্রাম এ কার্যক্রমের অন্তর্ভূক্ত।

 

আপনারা পড়ছেন সেরা ১০ আলিয়া মাদরাসা

 

তানযীমুল উম্মাহর বিজ্ঞান বিভাগ ও সায়েন্স ল্যাব

 

মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যেন শিক্ষার্থীরা ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় পারদর্শী হয়ে মানুষের সেবা করতে পারে সেজন্য বিজ্ঞান বিভাগ ও আধুনিক সায়েন্স ল্যাব।

 

তানযীমুল উম্মাহর কম্পিউটার ল্যাব

 

কম্পিউটার শিক্ষা ছাড়া  আজকের যুগে সব কিছু অচল । প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্পিউটার দিয়ে আধুনিক কম্পিউটার ল্যাবের ব্যবস্থা।

 

তানযীমুল উম্মাহর  পরীক্ষা পদ্ধতি

 

অত্র প্রতিষ্ঠানে গ্রেডিং পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বছরে ৩ টি সেমিস্টারসহ  Class Test   , Monthly Test ঞবং Model Test  -এর ব্যবস্থা ।

 

ভাষা শিক্ষা

 

অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতে ইংরেজী ও আরবীতে কথা বলতে পারেএবং ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করতে পারে সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা ।

 

শিক্ষকমন্ডলী ও প্রশিক্ষণ

 

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের বিকল্প নেই । সেজন্য তানযীমুল উম্মাহর প্রত্যক শাখার জন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকার ব্যবস্থা করেছে। আদর্শ ও যোগ্য মানুষ তৈরী করার জন্য প্রয়োজন যোগ্য ও আদর্শ শিক্ষক। তাই অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শিক্ষকের জন্য প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। শিক্ষকের জন্য দু’টি কোর্স ১. Basic  ২. Subjective.

 

বৃত্তি প্রকল্প

 

তানযীমুল উম্মাহর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মেধাবী ও যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থী তৈরি করা। শিক্ষার প্রতি আগ্রহী ও মেধার বিকাশ সাধনে বিশেষ কর্মসূচি হিসেবে বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য বৃত্তি প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

 

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন

আত্মনির্ভরশীল জাতিই শ্রেষ্ঠ। বর্তমান বিশ্বে টিকে থাকার জন্য আত্মনির্ভরশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই তানযীমুল উম্মাহ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক উন্নয়ন ও সামাজিক অবস্থান তৈরির জন্য বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে  তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন।

 

প্রকাশনা কার্যক্রম

একটি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার জন্য  সমৃদ্ধ ও যুগোপযোগী সিলেবাস অপরিহার্য। এ ছাড়া কলম যুদ্ধে অবতীর্ন হওয়ার জন্য লেখক তৈরির বিকল্প নেই। মাসিক ম্যাগাজিন, বিভিন্ন মননশীল প্রকাশনাই কেবল পারে চ্যালেঞ্জিং এ বাস্তবতার সামাল দিতে। তাই এর জন্য  নিজস্ব পাবলিকেশন্স থাকা একান্ত প্রয়োজন। তানযীমুল উম্মাহর নিজস্ব পাবলিকেশন্সের মাধ্যমে নিয়মিত একটি পত্রিকা প্রকাশসহ এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

 

আর্ত-মানবতার সেবা

আমাদের দেশে শতকরা ৮০ জন লোক দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে। দুস্থ-অসহায় লোকের সংখ্যাও অনেক। এছাড়া দেশের জনসাধারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। অনেকে খাদ্য ও বাসস্থানের মত একান্ত মৌলিক চাহিদাও পূরণ করতে পারে না। তাদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের কর্মসংস্থান, বন্যা, মঙ্গা কবলিত  জনগণকে সহায়তা দান, শিশুশ্রম বন্ধে প্রকল্প গ্রহণ এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে অংশগ্রহণ করা।

 

দাওয়াহ ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম

জনগণের মধ্যে ইসলামি চেতনা বৃদ্ধি ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করা, মানুষের নিকট ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছানোর লক্ষ্যে সেমিনার, আলোচনা সভা, সিডি-ভিসিডি, অডিও এ্যালবাম, বই-পুস্তক প্রকাশ, পাঠাগার প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন প্রচারপত্রসহ নানাবিধ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা এ কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত।

 

৬. ছারছিনা দারুস সুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা

 

সারা বাংলার জমিনে অন্যতম সেরা ইসলামী বিদ্যাপীঠ। শর্শিনার পির সাহেব বলে খ্যাত শাহ সূফী নেছারউদ্দীন আহমদ বর্তমান পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি থানায় ছারছিনা গ্রামে ১৯০৫ সালে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

 

ছারছিনা দারুস সুন্নাত আলিয়া মাদরাসার ইতিহাস

 

দ্বীন প্রচারের জন্য স্বরূপকাঠি থানায় শাহ সূফী নেছারউদ্দীন আহমদ তাঁর নিজ গ্রাম মাগুরায় ১৯০৫ সালে একখানা গোলপাতার কুতুবখানা জাতীয় ঘর নির্মাণ করেন। পীর সাহেবের ইচ্ছায় নির্মিত ৪০ হাত লম্বা ৭ হাত প্রস্থ সেই ঘরে ১৯১৮ সালে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার পাঠ্য তালিকা অনুসারে কয়েক জামাত নিয়ে একটি মাদ্রাসা উন্মুক্ত করা হয়। মাদ্রাসার নামকরণ করা হয় ছারছিনা দারুস সুন্নাত আলিয়া মাদ্রাসা। এই নামের মধ্য দিয়ে মাগুরা গ্রাম ছারছিনায় রূপান্তরিত হয়।

 

ছারছিনা মাদরাসা

মাদ্রাসার প্রথম হেড মৌলভী ছিলেন ইদিলপুরের মৌলভী মির্জা আলী। ১৯১৯ সালে গোলপাতা নির্মিত কুতুবখানাকে পাকা ভবনে উন্নীত করা হয়। ১৯২০ সালে প্রথম পাকা মসজিদ নির্মাণ করা হয়।

 

১৯২৩ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে দশটি নিউ স্কীম মাদ্রাসা খোলার পরিকল্পনা হয়। কারণ ওল্ড স্কীম মাদ্রাসার অনুমোদন সরকার আর দেয় না। পীর সাহেব এ প্রস্তাবে রাজি হননি। পূর্বেই এ কে ফজলুল হককে নিয়ে মাদ্রাসার জন্য ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১. এ কে ফজলুল হক,প্রেসিডেন্ট; ২. পীর সাহেব শাহ সূফী নেছারউদ্দীন আহমদ, সেক্রেটারি; ৩. হাজী গোলাম উদ্দিন তালুকদার, সদস্য; ৪. হাজী ইউসুফ আলী, কৌড়িখাড়া, সদস্য; ৬. হাজী দুদু ব্যাপারী, জগন্নাথকাঠি,সদস্য; ৭. এনসার উদ্দিন, সুটিয়াকাঠি, সদস্য; ৮. আবদুল গণি সরদার, শর্শিনা, সদস্য।

 

 

১৯১৫ হতে ১৯২৭ পর্যন্ত সময়কে মাদ্রাসার প্রাথমিক স্তর বলা চলে। জেলা ম্যাজিস্টেট ডনোভন ৪-১২-১৯২৬ তারিখে ছারছিনা পরিদর্শন করেন। তিনি ছারছিনা সড়ক নির্মাণ করেন। ১৯২৭ সালে মাদ্রাসাটি প্রথম দাখিল পরীক্ষা দেয়ার সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত হয়। ১৯২৮ সালে মাদ্রাসাটি জামাতে উলার পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি লাভ করে। ১৯৩৭ সালে জামাতে উলার স্থায়ী মঞ্জুরি পাওয়া যায়। ১৯২০ সালে মাদ্রাসার লিল্লাহ বোর্ডিং শুরু হয়।

 

 

ফুরফুরার পীর হযরত আবু বকর সিদ্দিকী ছারছিনা আগমন করেন এবং ১৯৩১ সালে মাদ্রাসার জন্য পাকা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৩৩ সাল থেকে ছাত্ররা বরিশাল কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পায়। ১৯৩৪ সালে শিক্ষামন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন ছারছিনা মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন।

 

আপনারা পড়ছেন সেরা ১০ আলিয়া মাদরাসা

 

১৯৫০ সালে ছারছিনায় পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপিত হয়। শাহ সূফী নেছারউদ্দীন তার সম্পত্তি ১৯৩৪ সালে মাদ্রাসার জন্য ওয়াকফ করে দেন। ১৯৩৫ সালে দ্বিতল ছাত্রাবাস নির্মিত হয়। ১৯৩৮ সালে এই মাদ্রাসায় টাইটেল পড়ানো শুরু হয়।

 

তখন কলকাতার বাইরে আর কোথাও টাইটেল মাদ্রাসা ছিল না। কলকাতার বাইরে টাইটেল খোলার অনুমতি ছিল না। এই মাদ্রাসার জন্য এ কে ফজলুল হক পূর্বের আদেশ বাতিল করে কলকাতার বাইরে টাইটেল খোলার অনুমতি দেন।

 

দ্বিতীয় বর্ষ টাইটেল খোলার উদ্বোধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী এ কে ফজলুল হক চাখার আগমন করেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে বরিশাল চলে যান। ১৯৪৪ সালে ছারছিনা মাদ্রাসার টাইটেল মঞ্জুর করা হয়। টাইটেল মঞ্জুরি দেয়ার জন্য বাংলার গভর্নর জন হারবার্ট এবং বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক ১৯৪০ সালে ছারছিনা মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। শেরে বাংলার চেষ্টায় গ্রাম বাংলায় সর্বপ্রথম এই ছারছিনাই টাইটেল খোলার অনুমতি পায়।

 

১৯৫০ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদ্রাসায় টাইটেল পরীক্ষা কেন্দ্র মঞ্জুর হয়। ওল্ড স্কীম মাদ্রাসায় সরকার অনুদান দিত না। কিন্তু পীর সাহেবের চেষ্টায় ছারছিনা মাদ্রাসা ওল্ডস্কীমে অনেক সরকারি অনুদান পেত। ১৯৫১ সালে মাদ্রাসার দারুল হাদীস ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

 

সহশিক্ষা কার্যক্রম

 

১৯১৫ সালেই মাদ্রাসায় তথা পিরের দরবারে প্রথম ১৪, ১৫, ১৬ অগ্রহায়ণ মাহফিলের তারিখ নির্ধারিত হয়। ১৯৩২ সালের ২৮ ও ২৯ ফাল্গুন দ্বিতীয় মাহফিল শুরু হয়। ১৯৪৮ সালে মাদ্রাসার নিজস্ব ছাপাখানা নির্মাণ করা হয়। ১৯৪৯ সালে পাক্ষিক তাবলীগ নামে পত্রিকা প্রকাশ করে ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

 

৭. বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা

 

এটি বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত দ্বীনি বিদ্যাপীঠ ও আলিয়া মাদ্রাসা। সংক্ষেপে বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা নামে পরিচিত।

এই মাদ্রাসাটি ১৯৮২ সালে শাহ সুফি আব্দুল জব্বার রহ. প্রতিষ্ঠা করেন। মাদ্রাসাটির অবস্থান চট্টগ্রাম শহররে ডাবলমুরিং থানার অন্তর্গত ধনিয়ালাপাড়া গ্রামে। এই মাদ্রাসা ২০১৯ সালে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে।

বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা সূচনালগ্নে মাত্র পাঁচটি শ্রেণী নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালের মধ্যে মাদ্রাসাটি ক্রমান্বয়ে কামিল পর্যায়ে উন্নীত হয়। দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখায় পাঠ কার্যক্রম চলমান। ফাজিল ও কামিলের উচ্চ শিক্ষার জন্য ২০০৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপর ২০১৬-১৭ সেশনে ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাদ্রাসাটিতে দুটি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। বিষয় দুটি হলো আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ।

বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা

মাদ্রাসার ছাত্রদের বৈচিত্র্যময় পাঠে নিজের মেধা ও মনন বিকাশের সুবিধার্থে মাদ্রাসার একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার রয়েছে। এছাড়াও মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে ‘বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা কেন্দ্রের’ একটি আন্তর্জাতিক মানের গন্থাগার রয়েছে।

 

মাদ্রাসাটি ১৯৯১, ২০০০ ও ২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতীয় পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে স্বীকৃতি ও পুরস্কার লাভ করে। এছাড়াও ২০০০ সালে মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ শাহ সুফী কুতুবউদ্দিন ও ২০১৭ সালে বর্তমান অধ্যক্ষ ড. সাইয়্যেদ আবু নোমান জাতীয় পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান’ হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন।

 

এছাড়াও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষায় মাদ্রাসাটি কৃতিত্বের সাক্ষর রাখে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত দাখিল-২০১৯ পরীক্ষায় বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে অত্র মাদ্রাসা ৷

 

৮. জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসা

 

এটি নরসিংদী বাংলাদেশের নরসিংদী জেলায় বিখ্যাত একটি আলিয়া মাদ্রাসা। স্থানীয়ভাবে মাদ্রাসাটি গাবতলী মাদ্রাসা নামে পরিচিত। মাদ্রাসা শিক্ষার শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম কামালুদ্দীন জাফরী মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদ্রাসাটি ফলাফলের দিক থেকে প্রায়ই বাংলাদেশের সকল মাদ্রাসার মধ্যে প্রথম দশে স্থান পেয়ে থাকে।

 

১৯৭৬ সালে এই মাদ্রাসাটি মেঘনা বিধৌত নরসিংদী সদর থানায় গাবতলী মাদ্রাসা নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। বর্তমানে মাদ্রাসার ছাত্র সংখ্যা ১৫০০ জনের অধিক।

জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসা

জামেয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিলসহ মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর কামিল পর্যন্ত চালু রয়েছে। মাদ্রাসার দাখিল পর্যায়ে বিজ্ঞান ও মানবিক উভয় শাখাই চালু রয়েছে এবং আলিম শ্রেণিতেও বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা চালু রয়েছে। মাদ্রাসার ফাজিল ও কামিল পর্যায়ে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ ও আল ফিকহ বিভাগ চালু রয়েছে।

 

জামেয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসা হতে প্রতি বছর হাফেজ সাহেব বের হচ্ছে এবং তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় নানা প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে ভালো ফলাফলের স্বাক্ষর রাখছে। মাদ্রাসায় কুরআন হেফজ করার পরে এই মাদ্রাসার আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ার সুযোগ রয়েছে।

 

এখানে রয়েছে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের জ্ঞান দানের আলাদা বিভাগ। ১ম শ্রেণী থেকে কামিল পর্যন্ত পৃথক ব্যবস্থাপনায় ছাত্রীদের পড়াশোনার মনোরম পরিবেশ এখানে বিদ্যমান। এতে করে নারী ও পুরুষের মধ্যে ইসলামিক আবশ্যক বিধান পর্দা পালন হচ্ছে। এই মাদ্রাসায় ছেলে ও মেয়েদের একত্রে মেলামেশা বা দেখা করার সুযোগ নেই।

 

 

৯. মিছবাহুল উলূম কামিল মাদরাসা 

 

ঢাকা জেলার মতিঝিলে অবস্থিত একটি আলিয়া মাদ্রাসা। তবে এটি টিএন্ডটি কলোনী মাদরাসা নামেও পরিচিত। ১৯৭৫ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি তার যাত্রা শুরু করে। মূলত তখন এটি তৎকালীন পিএন্ডটি কলোনি (যা বর্তমানে টিএন্ডটি নামে পরিচিত) এর নিবাসীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এখানে লেখাপড়া করছে। বর্তমানে এখানে এতিম শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পড়াশোনা করার সু-ব্যবস্থা রয়েছে।

মিছবাহুল উলূম কামিল মাদরাসা 

১৯৭৫ সালে ঢাকার মতিঝিলে মিছবাহুল উলূম কামিল মাদরাসা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মাদ্রাসার ইউনিফ্রম ছাত্রদের সাদা পাঞ্জাবী, ছাত্রীদের ধর্মীয় হিজাব।

 

১০. খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসা 

 

বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলিয়া মাদ্রাসা। বাংলাদেশের বিভাগীয় পর্যায়ের আলিয়া খ্যাতনামা মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে এই মধ্যে এই মাদ্রাসা অন্যতম। এই মাদ্রাসা ১৯৫২ সালে খুলনা মহানগরীতে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

 

দাখিল ও আলিম পর্যায়ের ফলাফলের দিক থেকে এই মাদ্রাসার সুনাম রয়েছে। খুলনা বিভাগের দাখিল, আলিম, ফাজিল, কামিল প্রভৃতি পরীক্ষার সময় এই মাদ্রাসাকে কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

 

১৯৫২ সালে ২ এপ্রিল তারিখে খুলনা বিভাগের প্রানকেন্দ্রে এই মাদ্রাসা স্থাপন করা হয়। এরপর ১৯৬৬ সালের ১ জুলাই পাকিস্তান সরকার কতৃক এই মাদ্রাসাটি অনুমোদন লাভ করে।

পড়ুন – সেরা ১০ টি কওমী মাদরাসা

পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে এই মাদ্রাসা কামিল মাদ্রাসায় রূপান্তরিত হয়। ২০২০ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫০টি মডেল উদ্বোধন করেন, এর মধ্যে একটি খুলনা আলিয়া মাদ্রাসা মডেল মসজিদ।

 

খুলনার স্থানীয় শিক্ষাবিদগনেরা বহুদিন যাবত এই মাদ্রাসাকে এই মাদ্রাসাকে ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার মত সরকারী মাদ্রাসায় রূপান্তরিত করার দাবী জানিয়ে আসছে।

 

খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষাস্তর ইবতেদায়ী থেকে শুরু করে আলিয়া মাদ্রাসার সর্বোচ্চ পর্যায় কামিল শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে। এছাড়ারাও এই মাদ্রাসার দাখিল ও আলিম উভয় স্তরে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা বিদ্যমান রয়েছে। এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে।

 

বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও এই মাদ্রাসার ফাজিল ও কামিল পর্যায়ে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়াহ প্রভৃতি বিভাগ চালু আছে। ফাজিল ও কামিল পর্যায়ের ছাত্রদের বিষয়ভিত্তিক গবেষণার সুযোগ রয়েছে। মাদ্রাসার প্রাতিষ্ঠানিক রেজাল্ট সবসময় খুলনা বিভাগের শীর্ষস্থানে থাকে। এছাড়াও এই মাদ্রাসার বহু শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে।

 

শেষ কথাঃ

 

এই ছিল আজকের বাংলাদেশের সেরা ১০ টি আলিয়া মাদরাসা নিয়ে আয়োজন । আমরা চেষ্টা করেছি যেসকল মাদরাসা সব দিক দিয়ে ভালো করেছে । এরকম দশটি আলিয়া মাদরাসার পরিচয় তুলে ধরার জন্য ।

 

শিক্ষা বিষয়ক যে কোন তথ্য জানতে এবং জানাতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন  

ফেসবুক গ্রুপ

 

Related Articles