পাসপোর্ট করার নিয়ম 2022
পাসপোর্ট করার নিয়ম
সূচিপত্র
পাসপোর্ট কী ?
আপনি কি হজ্ব ও ওমরা করতে চান ? রেমিটেন্স যোদ্ধা কিংবা বিদেশ সফরের স্বাদ পেতে চান ? তাহলে শুনুন । সর্ব প্রথম আপনার লাগবে একটি পাসপোর্ট । আর পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী একেবারে কঠিন নয় ।
নয় কোন ঝামেলার পাহাড়। একটু আধটু কষ্ট তো হবেই । সফলতার সোনার হরিণ কি হেঁটে হেঁটে আসে ? আচ্ছা থাক ওসব কথা। এবার চলুন ঝটপট পাসপোর্ট করার নিয়মগুলো জেনে আসি ।
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগবে ?
★ প্রয়োজনীয় তথ্য ( ডকুমেন্ট) সংগ্রহ করা ।
★ পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করা ।
★ পাসপোর্ট ফি জমা দেয়া ।
★ আবেদন ফরম অফিসে জমা দেয়া ।
★ পুলিশ ভেরিফিকেশন হওয়া ।#ক
★ পাসপোর্ট সংগ্রহ করা ।
যেভাবে পাসপোর্ট করা শুরু করবেন
আপনার পাসপোর্ট করার মিশন শুরু হবে পাসপোর্ট ফি জমা দেওয়ার মাধ্যমে। এজন্য আপনাকে যেতে হবে ব্যাংকে । বলতে হবে পাসপোর্ট করার কথা । তারা আপনাকে একটি স্লীপ দিবে ।
ইনফরমেশনগুলো লিখে টাকা জমা দিন । ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাকে একটি রশিদ দিবে। যার দুটি পার্ট থাকবে ।
একটি আপনার কাছে থাকবে । আর অপর পার্টি আপনি পাসপোর্ট আবেদন ফরমের উপর লাগিয়ে জমা দিবেন । আর পাসপোর্টের খরচ লাগবে আপনি কত দিনের মধ্যে চান তার উপর ভিত্তি করে। কেননা এ ক্ষেত্রে দুই নিয়ম চালু আছে । একটা হচ্ছে সাধারন । আর একটা আর্জেন্ট । অতএব আপনার কোনটা প্রয়োজন ভেবে দেখুন !
ই-পাসপোর্ট কি ও কেন
এখন ডিজিটাল যুগ । প্রযুক্তির ছোঁয়া সর্বত্র । এগিয়ে যাচ্ছে দেশ-বিশ্ব । সব কিছুর সঙ্গে পাসপোর্ট অঙ্গনেও লেগেছে পরিবর্তনের দোলা । তৈরি করা হয়েছে ই-পাসপোর্ট । ই-পাসপোর্টের সংক্ষিপ্ত পরিচয় হলো ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ ও অ্যান্টেনা যুক্ত একটি পাসপোর্ট ।
যেখানে একজন ব্যক্তির বায়োমেট্রিক পরিচিতি থাকে । অর্থাৎ ছবি , আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই চিপের ভেতর সমন্বিত করা থাকে।
এবার ই-পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী জেনে নিন ।
আপনার প্রথম কালেকশন
★ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহে রাখা ।
★ পাসপোর্ট ফর্ম ২ কপি ।
★ পাসপোর্ট সাইজ ২ কপি ছবি ।
★ স্মার্ট কার্ড সত্যায়িত ফটোকপি।
পাসপোর্ট করার নিয়ম
আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। বামদিকের প্রথম ট্যাব apply online passport এ ক্লিক করে আবেদন শুরু করুন । প্রথমে আপনার জেলা ও বর্তমান ঠিকানার নিকটবর্তী থানার নাম দিন। আপনার স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসের নাম আসবে। এখানেই ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র জমা দিন ।
আবেদনের সময় আপনার নাম ,জন্ম তারিখ, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, পেশা জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, পিতা-মাতার নাম , পেশা, যোগাযোগ নাম্বার, তারপর প্রেমেন্ট সেকশনে আবেদন ফি জমা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করুন । অনলাইন আবেদন শেষ করে পূরণকৃত আবেদন ফর্মটি ও বায়োমেট্রিক এর জন্য সাক্ষাতের সময়সহ আবেদনের সামারি ডাউনলোড করে প্রিন্ট দিয়ে নিন ।
এবার ফি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখিত সাইটে সঠিক তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করে শেষের দিকে বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড, বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে নির্ধারিত পেমেন্ট অংশে পেমেন্ট করুন । আর এই সময় টাকা পে করার পর একটি চালান ফর্ম পাবেন। এই ফর্মটি এক পেজে দুইটা প্রিন্ট করে একটা নিজের জন্য ও অন্যটা পাসপোর্ট ফর্মের জন্য ব্যবহার করুন ।
ই পাসপোর্ট এর খরচ কত লাগবে ?
এই প্রশ্নের উত্তরে আপনাকে বুঝতে হবে যে , ই-পাসপোর্ট-এর তিন ধরনের ডেলিভারি আছে । যেখানে আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর থেকে নির্ধারিত কর্মদিবস পর ই-পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে । তাই আপনি প্রয়োজন মোতাবেক কর্মদিবসের আবেদন করুন । সেই অনুযায়ী খরচ দিন ।
ছোটদের পাসপোর্ট করার নিয়ম
আপনি যদি ছোটদের সঙ্গে নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে তাদের পাসপোর্ট করতে হবে । আর তার জন্য রয়েছে কিছু নিয়ম নীতি । শুনুন ।
ছোটদের পাসপোর্ট করতে যা প্রয়োজন
★ আপনার সন্তানের দুই কপি রঙ্গিন ছবি ।
★ আপনাদের ( স্বামী-স্ত্রীর) দুই কপি ছবি ।
★ আপনাদের NID কার্ডের ফটোকপি ।
★সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি ।
★ চেয়ারম্যানের সনদপত্র ।
পড়ুন – রেজুলেশন লেখার নিয়ম
আপনি যেভাবে পাসপোর্ট করবেন
আবেদনপত্রের যাবতীয় ডকুমেন্ট নির্ভুল ভাবে লিখুন । অতঃপর আবেদনপত্রের উপর ছবি আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিন । প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার সত্যায়িত করুন । টাকার রশিদ কপি মূল কপির ওপর লাগিয়ে দিন । এবার নির্দিষ্ট স্থানে জমা দিন । নির্দিষ্ট দিন পরে খবর নিন বা আপনাকে এসএমএস করে জানানো হবে । এবার পাসপোর্ট দিয়ে আসুন ।
স্মরণ রাখুন ঢাকায় পাঁচটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস রয়েছে ।
এখান থেকে ছোটদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অর্থাৎ এমআরপি দেওয়া হয় । আর সেই অফিসগুলো হল ১/ আগারগাঁও ২/ উত্তরা ৩/সচিবালয় ৪) যাত্রাবাড়ী ৫/ ক্যান্টনমেন্ট । এই এলাকার আওতায় স্থানীয় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যক্তিরা পাসপোর্ট করতে পারবে । এছাড়াও ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জেলায় ছোটদের পাসপোর্ট করার সুযোগ আছে ।
দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করার উপায়
দালাল এখন সর্বত্র । দালালদের খপ্পরে যেন এখন জিম্মি সবকিছু । তবে পাসপোর্ট এরিয়াতে দালালদের আরও দৌরাত্ম্য বেশি । আপনি তাদের থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে পাসপোর্ট করার নীতিমালা ভালো করে আয়ত্ত করতে হবে । এমন ভাব দেখাতে হবে যেন আপনি এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ । আর আপনার চেনাজানা যারা পাসপোর্ট করেছে তাদের কাছ থেকে পুরোপুরি নিয়ম কানুন শিখে নিবেন। তাহলে আশা করা যায় আপনি দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করতে পারবেন ।
শেষকথাঃ
পাসপোর্ট করার নিয়ম নিয়ে আমি যতটুকু জানি তা জানানোর চেষ্টা করেছি । আশা করি একটু হলেও উপকৃত হবেন । যদি আমার লেখায় কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয় । তবে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমাদের । আমরা চেষ্টা করবো আপনার সমস্যাটি সমাধান করার ইনশাআল্লাহ ।
লিখেছেন: শরিফ আহমাদ